Advertising

How to Apply for Labour Card Online: অনলাইনে আবেদন, স্ট্যাটাস চেক ও ভারতের শ্রমিকদের জন্য সুবিধাসমূহ

Advertising

Advertising

শ্রমিক কার্ড কী?

ভারতের অনেক মানুষ কৃষি ও দৈনিক মজুরির উপর নির্ভরশীল। তাদের ও তাদের পরিবারের সমর্থনে ভারত সরকার এবং প্রতিটি রাজ্য সরকার একটি পরিচয়পত্র প্রদান করে, যা শ্রমিক কার্ড নামে পরিচিত। এই কার্ডের মাধ্যমে উপভোক্তারা বিভিন্ন সুবিধা ও পরিষেবা গ্রহণ করতে পারেন। সংক্ষেপে, শ্রমিক কার্ড হল একটি পরিচয়পত্র যা রাজ্য সরকারের শ্রম বিভাগ দ্বারা জারি করা হয় এবং শ্রমিকের নিরাপত্তা, উন্নয়ন, শিক্ষা এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যবহৃত হয়।

শ্রমিক কার্ডের প্রকারভেদ:

রাজ্য সরকার সাধারণত দুই ধরনের শ্রমিক কার্ড প্রদান করে:

১. বিল্ডিং কার্ড ২. সামাজিক কার্ড

বিল্ডিং কার্ড: যারা অনুমোদিত ঠিকাদারের অধীনে কাজ করেন তারা বিল্ডিং কার্ডের অধিকারী হতে পারেন। এই কার্ডধারীরা সরকারের বিভিন্ন স্কিমের প্রায় সব ধরনের সুবিধা পাওয়ার যোগ্য।

Advertising

সামাজিক কার্ড: এই কার্ডটি কৃষি, চাষাবাদ এবং অন্যান্য অ-বিল্ডিং কাজের সাথে যুক্ত শ্রমিকদের জন্য জারি করা হয়। সামাজিক কার্ডধারীরা স্বাস্থ্য বীমা সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন।

রাজ্য অনুযায়ী শ্রম বিভাগগুলির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট:

নিচে প্রতিটি রাজ্যের শ্রম বিভাগগুলির ওয়েবসাইটের তালিকা দেওয়া হল:

রাজ্য ওয়েবসাইট লিঙ্ক
অন্ধ্রপ্রদেশ https://labour.ap.gov.in/
অরুণাচল প্রদেশ http://labour.arunachal.gov.in/
আসাম https://labour.assam.gov.in/
বিহার https://state.bihar.gov.in/labour/CitizenHome.html
ছত্তিসগড় https://cglabour.nic.in/
গোয়া https://www.goa.gov.in/department/commissioner-labour-and-employment/
গুজরাট http://www.labour.gujarat.gov.in/
হরিয়ানা http://hrylabour.gov.in/
হিমাচল প্রদেশ http://himachal.nic.in/employment/
জম্মু ও কাশ্মীর http://jklabouremp.nic.in/
ঝাড়খণ্ড https://shramadhan.jharkhand.gov.in/home
কর্ণাটক https://labour.karnataka.gov.in/english
কেরালা http://www.lc.kerala.gov.in/
মধ্যপ্রদেশ http://www.labour.mp.gov.in/Default.aspx
মহারাষ্ট্র https://mahakamgar.maharashtra.gov.in/index.htm
মনিপুর http://manipur.gov.in/?page_id=1643
মেঘালয় http://dectmeg.nic.in/
মিজোরাম https://let.mizoram.gov.in/
নাগাল্যান্ড https://labour.nagaland.gov.in/
ওড়িশা http://www.labdirodisha.gov.in/
পাঞ্জাব http://pblabour.gov.in/
রাজস্থান https://labour.rajasthan.gov.in/
সিকিম https://sikkim.gov.in/departments/labour-department
তামিলনাড়ু http://www.labour.tn.gov.in/
ত্রিপুরা http://labour.tripura.gov.in/
উত্তরাখণ্ড http://labour.uk.gov.in/
উত্তরপ্রদেশ http://uplabour.gov.in/
পশ্চিমবঙ্গ http://wblwb.org/html/index.php
চণ্ডীগড় http://chandigarh.gov.in/dept_labour.htm
দাদরা ও নগর হাভেলি https://www.daman.nic.in/Labour-and-Employment.aspx
দিউ http://diu.gov.in/labour-and-employment-department-diu.php
দিল্লি http://www.delhi.gov.in/wps/wcm/connect/doit_labour/Labour/Home/
লক্ষদ্বীপ https://lakshadweep.gov.in/departments/labour-employment-and-training/
পুদুচেরী https://labour.py.gov.in/

এভাবে প্রতিটি রাজ্যের শ্রমিকদের জন্য পৃথক ওয়েবসাইট রয়েছে, যেখানে তারা শ্রমিক কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন এবং স্ট্যাটাস চেক করতে পারেন।

শ্রমিক কার্ডের জন্য আবেদন করার যোগ্যতার মানদণ্ড:

একটি শ্রমিক কার্ডের জন্য আবেদন করতে হলে, কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতার মানদণ্ড পূরণ করতে হবে। এই মানদণ্ডগুলো হল:

১. বয়স সীমা: আবেদনকারীর বয়স ১৮ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে হতে হবে। এই বয়সসীমা এমনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে যাতে কর্মক্ষম ও যুবক শ্রমিকরা এর সুবিধা পেতে পারে।

২. অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক: আবেদনকারীকে অবশ্যই অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক হতে হবে। অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক বলতে তাদের বোঝানো হয় যারা কোনো নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন না বা যাদের কোনো নির্দিষ্ট চাকরি নেই।

৩. ভারতীয় নাগরিকত্ব: শ্রমিক কার্ডের জন্য আবেদনকারীকে অবশ্যই ভারতীয় নাগরিক হতে হবে। এটির মাধ্যমে শুধুমাত্র ভারতীয় শ্রমিকদের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।

৪. প্রাতিষ্ঠানিক কর্মী না হওয়া: আবেদনকারী কোনো প্রাতিষ্ঠানিক সেক্টরে কর্মরত থাকা যাবে না বা তিনি EPF, NPS বা ESIC-এর সদস্য হওয়া যাবে না। এর অর্থ হলো যে ব্যক্তিরা এরকম প্রতিষ্ঠানিক সুবিধা পাচ্ছেন তারা এই কার্ডের জন্য যোগ্য নন।

৫. আয় সীমা: আবেদনকারীর মাসিক আয় ১৫,০০০ টাকার বেশি হওয়া যাবে না। এটি নিম্ন আয়ের শ্রমিকদের লক্ষ্য করে তৈরি করা হয়েছে যাতে তাদের পরিবারকে সাহায্য করা যায়।

৬. আয়করদাতা না হওয়া: আবেদনকারীকে অবশ্যই আয়করদাতা না হতে হবে। এটি নিশ্চিত করে যে এই কার্ডের সুবিধাগুলি শুধু দরিদ্র এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকরা পান।

৭. রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা: আবেদনকারীকে সেই রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে যেখানে তিনি শ্রমিক কার্ডের জন্য আবেদন করছেন।

শ্রমিক কার্ডের জন্য প্রয়োজনীয় নথি:

শ্রমিক কার্ডের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে চাইলে আবেদনকারীর কিছু নির্দিষ্ট নথি থাকা প্রয়োজন। এই নথিগুলি হল:

১. আধার কার্ড: আবেদনকারীর পরিচয়ের জন্য আধার কার্ড আবশ্যিক।

২. রেশন কার্ড (ঐচ্ছিক): এটি আবশ্যিক নয়, তবে অভাবী ব্যক্তিদের জন্য এটি একটি উপকারী নথি।

৩. ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর: যে কোনো আর্থিক লেনদেন বা ভর্তুকির সুবিধা পেতে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট প্রয়োজন।

৪. ইমেল আইডি: আধুনিক যোগাযোগের জন্য একটি ইমেল আইডি প্রয়োজন।

৫. পরিবারের সদস্যদের আধার কার্ড নম্বর: পরিবারকে যুক্ত করার জন্য পরিবারের সদস্যদের আধার নম্বর প্রয়োজন হতে পারে।

৬. মোবাইল নম্বর: আবেদন প্রক্রিয়া এবং তথ্য যাচাইয়ের জন্য একটি সক্রিয় মোবাইল নম্বর প্রয়োজন।

৭. পাসপোর্ট সাইজ ছবি: আবেদনকারীর পরিচয়ের জন্য পাসপোর্ট সাইজের ছবি প্রয়োজন।

কিভাবে শ্রমিক কার্ডের জন্য অনলাইনে আবেদন করবেন?

শ্রমিক কার্ডের জন্য অনলাইনে আবেদন করার প্রক্রিয়াটি সহজ এবং সবার জন্য উপলব্ধ। এখানে ধাপে ধাপে প্রক্রিয়া দেওয়া হয়েছে:

১. রাজ্যের শ্রম বিভাগের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান। এখানে প্রতিটি রাজ্যের জন্য আলাদা ওয়েবসাইট রয়েছে, যেমন পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক ইত্যাদি।

২. ‘নতুন শ্রমিক কার্ড নিবন্ধন’ অপশনটি সন্ধান করুন। এটি সাধারণত হোম পেজে বা পরিষেবা বিভাগের মধ্যে থাকে।

৩. এরপর ড্রপ-ডাউন মেনু থেকে আপনার জেলার নাম বেছে নিন।

৪. আপনার ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান করুন যেমন আপনার প্রথম নাম, শেষ নাম, ইমেল ঠিকানা এবং মোবাইল নম্বর।

৫. আপনার আধার কার্ড নম্বরটি প্রবেশ করুন এবং যাচাই করুন।

৬. মোবাইল নম্বর এবং ইমেল ঠিকানা যাচাই করুন। কিছু রাজ্যে একবার মোবাইল নম্বর ও ইমেল যাচাইয়ের পরেই আবেদন প্রক্রিয়া এগিয়ে যেতে পারে।

৭. সবকিছু ঠিকঠাক হলে ‘জমা দিন’ বোতামে ক্লিক করুন।

কিভাবে শ্রমিক কার্ড ডাউনলোড করবেন?

বর্তমানে অনলাইনে শ্রমিক কার্ড ডাউনলোড করার কোনো অপশন নেই। শ্রমিকদের কাছাকাছি শ্রমিক দপ্তরে যেতে হবে এবং সেখান থেকে শ্রমিক কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। তবে সরকার ভবিষ্যতে অনলাইন ডাউনলোডের সুবিধা চালু করতে পারে।

শ্রমিক কার্ডের সুবিধাসমূহ:

শ্রমিক কার্ড শ্রমিকদের জন্য অনেক ধরনের সুবিধা প্রদান করে থাকে। এই সুবিধাগুলি নিম্নরূপ:

১. বিনামূল্যে শিক্ষা ও জীবনবীমা সুবিধা: শ্রমিক কার্ডধারীদের সন্তানদের শিক্ষা এবং শ্রমিকদের জীবনবীমা সুবিধা প্রদান করা হয়, যা তাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করে।

২. বিনামূল্যে স্বাস্থ্য বীমা: PM Aysuhman Bharat Yojana, Biju Swathya Kalyan Yojana-এর মতো স্বাস্থ্য বীমা প্রকল্পের আওতায় কার্ডধারীরা বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা পান।

৩. মাতৃত্বকালীন সহায়তা: মহিলাদের জন্য গর্ভাবস্থা ও সন্তানের জন্মের সময় আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।

৪. দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু বা আঘাতের ক্ষেত্রে সহায়তা: দুর্ঘটনার কারণে কোনো শ্রমিক মারা গেলে বা আহত হলে পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।

৫. শিক্ষাবৃত্তি: শ্রমিক কার্ডধারীদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য স্কলারশিপ বা শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়।

৬. শ্রমিক সরঞ্জাম কেনার জন্য আর্থিক সহায়তা: শ্রমিকদের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম কেনার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।

৭. গৃহঋণ সুবিধা: শ্রমিক কার্ডধারীরা সুলভ শর্তে গৃহঋণ পেতে পারেন, যা তাদের নিজস্ব বাড়ি গড়তে সহায়ক হয়।

৮. দক্ষতা উন্নয়নের সহায়তা: শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।

৯. কন্যা বিবাহে আর্থিক সহায়তা: শ্রমিক কার্ডধারীদের কন্যার বিবাহের জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।

প্রশ্নোত্তর:

১. কাদের শ্রমিক কার্ডের জন্য আবেদন করার অনুমতি রয়েছে?

শ্রমিক কার্ডের জন্য সেই ব্যক্তিরা আবেদন করতে পারেন যারা বছরে অন্তত ৯০ দিন কাজ করেন। সাধারণত আবেদনকারীকে তার কাজের ৯০ দিনের সার্টিফিকেট সংযুক্ত করতে হয়।

২. শ্রমিক কার্ড কি NREGA জব কার্ডের সমতুল্য?

না। শ্রমিক কার্ড এবং NREGA জব কার্ড এক নয়। NREGA জব কার্ডটি মূলত গ্রামীন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়।

৩. শ্রমিক কার্ডের জন্য অনলাইনে আবেদন করা কি সম্ভব?

হ্যাঁ। শ্রমিক কার্ডের জন্য আপনার রাজ্যের শ্রম বিভাগের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে আবেদন করা সম্ভব।

৪. শ্রমিক কার্ড নবীকরণ করা কি প্রয়োজন?

হ্যাঁ। একবার শ্রমিক কার্ডের মেয়াদ শেষ হলে সেটি নবীকরণ করতে হয়।

 

Leave a Comment